বাহারি স্বপ্ন [পর্ব-১৪]

রূপক ড. ইভানের কেবিনে বসে আছে।আশিনের ওপর সন্দেহের পাহাড় এখনো ধ্বসে পড়ে নি তার মস্তিষ্ক থেকে।উল্টো বৃদ্ধি পেয়েছে।এরই প্রেক্ষিতে হাসপাতালে অন্য একজন ডাক্তার আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো রূপক।ইভান খুবই অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন ডাক্তার।লাশগুলো যেহেতু তখনও মর্গে রাখা ছিলো তাই রূপক চেয়েছে পুনরায় লাশগুলোকে পোস্টমর্টেম করতে।ইভান রাজি হয়েছে। রূপক একবার মঞ্জুরির দিকে তাকায়। অন্যপাশে ফিরে বলে,“ মিস মঞ্জুরি কি মনে হয়? ওই কাজের মেয়েটিই চাচীকে মেরে ফেলেছে?”

মঞ্জুরি শীতল দৃষ্টিতে তাকায় রূপকের দিকে। মিসেস উষা তালুকদারের সেই পানকৃত পানীয়তে বিষ মিশিয়েছিলো তাদেরই বাড়িতে কাজ করা এক মেয়ে।মেয়েটি দুবছর যাবৎ তালুকদার বাড়িতে কাজ করছে।বয়স মঞ্জুরির থেকে বছর দুয়েক কম হবে। মেয়েটার নাকি মিসেস উষার ওপর ক্ষোভ ছিলো অনেকদিনের তাইতো এমন কাজ করেছে।এখন বড় কথা হচ্ছে বিষটা সে কোথায় পেয়েছে? এত দামী বিষ নিজে থেকে তো কেনা একদমই অসম্ভব।এটার উত্তরটা অবশ্য মেয়েটা দিয়েছে।মেয়েটা নাকি কোথা থেকে টাকা চুরি করে সেই বিষটা কিনেছে।কিন্তু সেই বিষের খবর পেলো কোথায়? আর টাকাটাই বা কার থেকে চুরি করেছে? একজনকে খুন করার জন্য এভাবে চুরি, দূর্লভ বিষ খোঁজার বিষয়টার উত্তর দেয় নি মেয়েটা।তার একটাই কথা মিসেস উষা তার সাথে বাজে ব্যবহার করেছেন তাই সে উনাকে মেরে দিয়েছে।এই সমস্ত তথ্য মূলত আজকেই মেয়েটির থেকে উদঘাটন করা হয়েছে।এতদিন মেয়েটি পালিয়ে বেরিয়েছিলো অন্যগ্রামে গ্রামে।রূপক সিসিটিভি ফুটেজ এর মাধ্যমে মেয়েটির খোজ পেয়েছিলো। এছাড়া আর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নি মেয়েটির পক্ষে।মঞ্জুরি মাথা নাড়িয়ে জবাব দেয়,“ যেহেতু মেয়েটি নিজেই স্বীকার করেছে এখানে আর আমার কোনো কথা বলার কিংবা যুক্তি দেখানোর থাকে না।”

রূপক চমৎকার হাসে।

হাতে থাকা পানির গ্লাসটা টেবিলের ওপর রেখে বলে,“ আমার এখনও সন্দেহ হয় একজনকে।”

কথাটা শুনে ভ্রুকুটি করে রূপকের দিকে ফিরে তাকায় মঞ্জুরি।রূপক কিছু একটা ভেবে বলে,“ আজ নাকি ড. আশিন ঢাকায় যাবে।চলে গেলো নাকি?”

“ আপনার তো তাকে অপছন্দ, যেখানেই যাক আপনার তো প্রশ্ন করার কথা নেই যেহেতু এখন আসল অপরাধী পাওয়া গিয়েছেই।”

ট্যারছা চোখে মঞ্জুরির দিকে তাকায় রূপক।তার সন্দেহের খাতা থেকে না এই মঞ্জুরিকে বাদ দিয়েছে আর না আশিনকে।তবে আশিনের প্রতি অন্য এক অনুভুতি কাজ করে ওঠে তার।বলা চলে খুবই নিষিদ্ধ অনুভুতি।ভালোলাগা?না এমনটা মোটেও নয়।তবে কি সেই অনুভুতি এই ব্যাপারে অবশ্য রূপক এখনও দ্বিধান্বিত।আশিনের দিকে আঙ্গুল তুলতেই আবারও কিছু একটার বাধা পেয়ে নামিয়ে দেয় রূপক। বিস্মিত কথা হলো আশিনের প্রতি রূপক কিছুটা হলেও অভিভূত।কারণটা অবশ্য আশিনের মুখ হতে নিঃসৃত সেই বাঁকা হোক বা অদ্ভুত কথাবার্তা।রূপক মোটেও বিচলিত নয় উচ্ছ্বসিত বলা চলে।তার এমন উদ্ভট সব ভাবনার মাঝে দরজা ঠেলে  হলুদ শার্ট আর কালো প্যান্ট পরনে, গোল ফ্রেমের চশমা পরিহিত, বাম হাতে এপ্রোন ঝুলানো আর ডান হাতে একটি রিপোর্টের ফাইল শ্যামবর্ণের পুরুষ প্রবেশ করে।এমন অতিরঞ্জিত হলুদ শার্ট পড়ে কে?এটা ড. ইভানকে না দেখলে হয়তো বোঝা যেতো না। নড়েচড়ে বসে রূপক। ইভান গিয়ে নিজের ইজি চেয়ারের ওপর এপ্রোনটা রাখে। গলায় ঝোলানো স্টেথোস্কোপটা টেবিলের ওপর রেখে দেয়।হাতে থাকা রিপোর্টের ফাইলটাও রাখে সেখানে। নিজ আসনে বসতেই আগে রূপকের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দেয়।হাসিতে সৌজন্যতা স্পষ্ট।রূপকও সৌজন্যমূলজ ঠোঁট বেকিয়ে হাসে।ইভান নিজ ভরাট পুরুষালী আওয়াজে শুধায়,“ কেমন আছেন অফিসার?”

প্রশ্নটা রূপকের উদ্দেশ্যে ছোড়া।মঞ্জুরি তার ফোন নিয়ে ব্যস্ত।এবার একটু চোখ তুলে ইভানকে দেখে আবারও চোখ নামিয়ে নেয়।রূপক সহাস্যে জবাব দেয়,“ এই ভালো তো এই খারাপ।আপনার বিষয়ে বলুন।”

রূপকের উত্তরটা ভীষণ পছন্দ হয়ে ইভানের। তবুও প্রসংশা ব্যক্ত করে না।পাল্টা প্রশ্নের জবাবে উত্তর দেয়,“ আমার বিষয়টা তো আরও জটিল। যাই হোক এই নিন রিপোর্ট।আশা করি এবার আর কোনো প্রশ্ন থাকবে না আপনার।”

রূপক হাত বাড়িয়ে ফাইলটা নেয়।কিছুক্ষণ যাবৎ উল্টেপাল্টে খুব মনোযোগ সহকারে দেখে সব। দরজা ঠেলে ওয়ার্ডবয় এসে রূপককে জানায়,“ তৌশিক রূপকের সাথে কথা বলতে চায়।খুবই জরুরী।”

রূপক রিপোর্টগুলো পড়ে হতাশ হয়।আগেরগুলোর সাথে এবারের কোনো পার্থক্য নেই।তৌশিকের জরুরী তলবের কথাটা শুনে উঠে দাঁড়িয়ে যাওয়ার জন্য অগ্রসর হয়।কেবিনের বাইরে আসতেই তৌশিক তার কাছে এগিয়ে এসে বলে,“ স্যার, উৎস স্যার ড. আশিনের পিছু পিছু ঢাকায় গিয়েছে।এইমাত্র জানতে পারলাম।”

অবাক না হয়ে পারে না রূপক।আশিন নাহয় নিজের বাবার চিকিৎসকার্যে গিয়েছে সেখানে উৎসের কি কাজ?তৎক্ষনাৎ ফোন বের করে উৎসের নাম্বারে কল দেয় রূপক।তিনবার রিং হতেই ওপাশ থেকে কল রিসিভড হয়।রূপক রুক্ষ স্বরে বলে,“ ঢাকায় কি করতে গিয়েছিস?”

অপরপাশ স্তব্ধ।এতে তিরতির করে রাগ বেড়ে যায় রূপকের।দাত চিবিয়ে চিবিয়ে কঠিন কিছু বলার আগমুহুর্তেই ওপাশ থেকে জবাব আসে,“ উৎস ঘুমাচ্ছে।”

জবাবটা উচ্ছ’র দেওয়া।ওপাশ হতে উচ্ছ’র কন্ঠস্বর শুনে রূপক দমে যায়।তারমানে উচ্ছ’র কাছে গেছে উৎস।রূপক শান্ত আওয়াজে বলে,“ হঠাৎ তোর বাড়িতে কি করছে?”

“ বেড়াতে এসেছে নাকি।”

‘বেড়াতে?’ ভীষণ গম্ভীর স্বরে বলে রূপক।এখন ঘুরে বেড়ানোর সময়?কল কেটে দেয় রূপক।ইভান আর মঞ্জুরিকে না জানিয়েই চলে যায় সে।

ভেতরে থাকা ইভান আর মঞ্জুরি নিজেদের মতো বসে আছে।ইভান আজকের সংবাদ পড়ছে।আর মঞ্জুরি তখনও ফোন নিয়ে ঘাটাঘাটি করেই যাচ্ছে।ইভান একবার মাথা তুলে মঞ্জুরির দিকে তাকায়।মেয়েটা তখনও ফোনেই নিবিড় মনোযোগে খুব সূক্ষ্মভাবে কিছু একটা পর্যবেক্ষণ করছে।ইভান গলা ঝেড়ে কেশে মঞ্জুরির দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করে একটা সময় গিয়ে সফলও হয়।মঞ্জুরি তার দিকে তাকাতেই ইভান মুচকি হেসে জিজ্ঞাসা করে,“ আপনার জন্য কি চা এর ব্যবস্থা করবো অফিসার?”

মঞ্জুরি সৌজন্য হেসে জবাব দেয়,“ তার কোনো প্রয়োজন নেই ড.।”

কথাটা বলে আবারও ফোনে মনোযোগ দেয়।ইভান দুই ভ্রু উঁচায়।মঞ্জুরির ফোনে কল আসতেই মঞ্জুরি হঠাৎ উঠে ইভানকে বিদায় জানিয়ে চলে যায়।মঞ্জুরি চলে যেতেই ইভান উঠে দাঁড়ায়।ধীরসুস্থে হেঁটে দরজার সামনে ঘার সামনে ঠেকিয়ে এদিকে ওদিক পর্যবেক্ষণ করে।আপাতত এখানে কেউ নেই।এই সুযোগ ভেতর থেকে দরজা লক করে কাউকে কল করে ইভান।দুবার কল দিতেও রিসিভ হয় না। তিনবারের মাথায় রিসিভ হয়।ইভান ঠোঁট বাকিয়ে হাসে,“ এখনো অনেক কিছুই করতে হবে আমাদের। রূপক এই কেইসের শেষটা দেখে ছাড়বে মনে হচ্ছে।”

ওপাশে কি বলা হচ্ছে সেটা শোনা যায় না।তবে ইভান এপাশ থেকে বলে,“ আমি চেষ্টা করছি।”

থেমে যায় ইভান।পুনরায় কথার পিঠে কথা লাগিয়ে বলে,“ ড. আশিন ঢাকা গিয়েছে।আসবে কবে জানা নেই।তারই পরিবর্তে আমি আছি বেশ কয়েকদিন। তবে পার্মানেন্ট থাকার ব্যবস্থা তোমাকেই করতে হবে।”

তৃপ্তিমূলক কথা শুনতেই তৃপ্তির হাসি দিয়ে কল কেটে দেয় ইভান।তার কেবিনের বাম পাশে একটি জানালা আছে।জানালাটি বিশাল বড়।জানালার সামনে যেতেই দেখে জানালার পাশে থাকা শিউলি ফুলের গাছটিতে শিউলি ফুলে ভরে গেছে।ফুল ইভানের ভীষণ পছন্দ।সেটা যদি হয় শিউলি তবে তো কোনো কথায়ই নেই।দূরে মঞ্জুরিকে দেখা যাচ্ছে।ফোনে কথা বলে বলে চলে যাচ্ছে।অফিসার কি হেঁটে যাচ্ছে নাকি? এটা ভেবেই হেসে ওঠে। 

______________________

উচ্ছ রান্নাবান্না করছে।উৎস এখনও ঘুম থেকে ওঠেনি।ষাড়ের মতো নাক ডেকে ঘুমিয়ে যাচ্ছে। এই ছেলে তার বাসায় আসলেই এতো ঘুমায় কেন উচ্ছ বুঝে না।উৎস যে ঠিক কোন কারণে এখানে এসেছে সেটা উচ্ছ খুব ভালোভাবেই টের পেয়েছে।উচ্ছ’র বিয়ের ব্যাপারটা গুজব নয়।সত্যি!

তবে সেটা আপাতত কেউ জানে না।উচ্ছ জানতো উৎস কোনো না কোনোভাবে জেনে যাবেই।তাইতো নিজেকে এতোটা শীতল রাখতে পেরেছে।আজ রাতেই কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ের পর্ব সেড়ে আসবে উচ্ছ।ঠান্ডা মাথায় কাজ করা উচ্ছ’র স্বভাব। যার সাথে বিয়ে হবে মেয়েটা তারই অফিসের কলিগ রেহানাকে।এর পেছনে অবশ্য ভয়ানক এক ঘটনা আছে।মূলত উচ্ছ বাধ্য হয়েই বিয়েটা করছে।নয়তো তার কোনো ইচ্ছে নেই এই বিয়ের।অনিচ্ছা স্বত্তেও বিয়েটা করতে হবে।কারণটা সম্পর্কে উৎস অবগত। উচ্ছ নিজেও জানে না এটা কিভাবে জানলো উৎস। পরক্ষণেই যখন মনে পড়লো, ‘ওহ তার ভাই তো উৎস।’ তখন মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষের আঘাতগুলোও কিছুটা কমেছে।নয়তো চাপ প্রয়োগ হচ্ছিলো এই ভেবে উৎস কিভাবে জানলো?

শীতকাল অনেকের পছন্দ আবার অনেকেরই অপছন্দ।তবে উৎস’র শীতকাল ভীষণ পছন্দের। জ্যাকেট গায়ে জড়িয়ে উচ্ছ’র ফ্ল্যাটের বারান্দায় পাতানো বেতের সোফাতে পায়ের ওপর পা তুলে বসে আছে।টেবিলের ওপর গরম এক মগ কফি রাখা। কফির গ্লাস হতে গরম ধোয়া বাষ্পীভূত হচ্ছে। কফি অতোটা পছন্দ না হলেও উচ্ছ’র জোড়াজুড়িতে খেতে হচ্ছে তার।কফির গ্লাস হাতে নিয়ে এক চুমুক দেয় উৎস।গলাধঃকরণ হতেই ভাবে খারাপ হয় নি। আজ অন্যদিনের তুলনায় বেশি ঠান্ডা পড়েছে। চারপাশ কেমন কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে। সাড়িবদ্ধভাবে সেজে থাকা বিল্ডিংগুলো দেখতেও বেগ পেতে হচ্ছে।উৎস বাচ্চাদের মতো এমনটাই করে যাচ্ছে।চোখ ঢলছে আর বিল্ডিংগুলো দেখার চেষ্টা করছে।পেছন থেকে উচ্ছ এসে কাধে হাত রাখে। উৎস তৎক্ষনাৎ হাতটা সড়িয়ে দেয় উচ্ছ’র।উচ্ছ উৎসের পাশের সিঙ্গেল সোফায় গিয়ে বসে পড়ে।

তার হাতেও একটি কফির মগ।

“ আশিন ঢাকায় এসেছে শুনলাম।”

চোখ মুখ কুঁচকে নেয় উৎস,“ আজ রাতে তোর বিয়ে ব্যাটা।পরনারী নিয়ে কথা বলছিস কেন?তোর হবু বউয়ের সম্পর্কে বল কিছু?”

উচ্ছ মলিন হাসে।কথায় আছে একটি ভুল সারাজীবনের কান্না।তার আজকে খুব করে মনে হচ্ছে এই কথাটা তার জন্যই সৃষ্ট।উৎস’র দিকে তাকিয়ে দেখে ছেলেটার চোখ উজ্জ্বল আজ। উচ্ছ মনে মনে হাসে।আর মনে মনেই বলে,‘ তুই কি জিতে গেছিস উৎস?’

উৎস কি আর সেসব শুনতে পাবে?সে তো কফির মগে চুমুক দিতে ব্যস্ত।অন্যদিনের তুলনায় ছেলেটাকে আজ খুশি দেখাচ্ছে বলে মনে হলো উচ্ছ’র।নিজের কফির মগে এক চুমুক দিয়ে মুখে বলে,“ শুধুই কি আমার বিয়ের বিষয়টা জেনে এসেছিস?নাকি অন্য কোনো কারণও আছে?”

উৎসুক হয় উৎস।ঠোঁটে কেমন বোকা হাসি ঝুলিয়ে বলে,“ তোর কি মনে হয়?”

“ আগে এই হাসি হাসা বন্ধ কর।তোকে এমন হাসিতে মোটেও মানায় না।”

‘হুহ’ বলে উৎস গম্ভীর রূপে ফিরে যায়।এই রূপের সাথে বাইরের জগতের মানুষই বেশি পরিচিত।উচ্ছ’র সাথে খুবই উৎফুল্ল আচরণ করে উৎস।তবে পুরোন দুনিয়াকে যেন গম্ভীর,রুষ্ট, তিরিক্ষি মেজাজ দেখাতেই পছন্দ উৎস’র।এসব ভেবে উচ্ছ নিজেই হাসে।আশিনকে দেখতে ইচ্ছে করছে।তবে এখন দেখা করলেও উচ্ছ’র ভীষণ লজ্জা করবে।সামনের দিকে চোখ রাখে উৎস।কুয়াশার আচ্ছাদনে ঢেকে থাকা চারপাশ দেখে মনে হচ্ছে আজ তার হৃদয়ও কিছুটা ব্যথিত বুঝি।অবশ্য হওয়ারই কথা।উৎস উচ্ছ’র এই ভাবনার মাঝে বলে,“ আশ্বিন আর আশিনের মাঝে বিস্তর পার্থক্য।নামেও যেমন পার্থক্য বিষয়াদিতও পার্থক্য।কোথায় মানুষ আর কোথায় একটি বাংলা মাস।আশ্বিন মাস কিছুটা হলেও শীতল থাকে বলা চলে।তবে এই আমাদের সাথে,আমাদের চেনা আশিন মোটেও শীতল নয়।একটি ঘুর্ণিঝড়ও বলা চলে।ঘূর্ণিঝড় তো পরিবেশ ক্ষতি করে তবে এই আশিন আমাদের মাইন্ডে ক্ষতি করে।”

থেমে যায় উৎস।কফির মগটা টেবিলে রেখে দিয়ে বলে,“ শুধু মাইন্ড নয় হৃদয়েও ক্ষত এঁকে দেওয়ার কঠিন সক্ষমতা রাখে এই আশিন।”

উঠে দাঁড়িয়ে হেঁটে উচ্ছর পেছনে গিয়ে দাঁড়ায়।তবে উলটো ঘুরে।শান্ত আওয়াজে শুধায়,“ অতীতে কি করেছিস তারই মাশুল দিতে হচ্ছে তোর এখন। তোর মাইন্ড,হার্ট সেটআপ করে নে।ক্ষত হবে আবার সেড়ে যাবেও।হোক না সেটা হৃদয়ের ক্ষত।যেটা আসছে সানন্দে গ্রহণ করাই উচিত।আর ঘুর্ণিঝড়, সেটার মোকাবেলা আমিই করে দেখি।”

চলবে… …..

  • Related Posts

    সেদিন ও সে [পর্ব-১০]

    সূর্য ওঠার অনেক আগেই পেখমের ঘুম ভেঙে যায়। তার কপালে হালকা ঘাম, সাথে শরীর এতো নরম লাগছে যেন মনে হচ্ছে কবছর জ্বরে হুশ ছিলো না অনায়াসে; এদিকে বুকটাও কেমন ধকধক…

    প্রজাপতি আমরা দুজন [পর্ব-০৩]

    আস্তে করে দরজা ঠেলে তিতলি উঁকি দেয় রুমের ভেতর।প্রথমেই চোখের সামনে ভেসে উঠে মেহগনি উডেন ডাবল সাইড বেড।মানুষ কোথায়?চোখ ঘুরিয়ে ডান পাশে তাকাতেই সাদা এক জোড়া বল সোফা দেখতে পায়।সেখানে…

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    You Missed

    সেদিন ও সে [পর্ব-১০]

    সেদিন ও সে [পর্ব-১০]

    প্রজাপতি আমরা দুজন [পর্ব-০৩]

    প্রজাপতি আমরা দুজন [পর্ব-০৩]

    মেঘের দেশে প্রেমের বাড়ি [পর্ব-০৩]

    মেঘের দেশে প্রেমের বাড়ি [পর্ব-০৩]

    সেদিন ও সে [পর্ব-৮ & ৯]

    সেদিন ও সে [পর্ব-৮ & ৯]

    নবোঢ়া: আগুনফুলের আত্মনিবেদন [পর্ব-৫২]

    নবোঢ়া: আগুনফুলের আত্মনিবেদন [পর্ব-৫২]

    নবোঢ়া: আগুনফুলের আত্মনিবেদন [পর্ব-৫১]

    নবোঢ়া: আগুনফুলের আত্মনিবেদন [পর্ব-৫১]