একজন আদর্শবান শিক্ষক

একবার এক শিক্ষক কড়া ধমক দিয়ে তার ক্লাসের সবচেয়ে দুষ্ট এবং মজার ছাত্রটিকে বললেন- এদিকে আয়। বল আমাদের শরীরে কয়টা কিডনি আছে?
ছাত্রটি নির্লিপ্তভাবে উত্তর দিল- ‘চারটি স্যার’। ছেলেটির এমন বিস্ময়কর এব উদ্ভট জবাব শুনে ক্লাসের অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীরা অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো। শিক্ষক এবার সবাইকে ধমক দিয়ে বললেন, এই তোরা সবাই হাসি থামা।
এইযে ক্লাসের ফাস্ট বয় খিলখিল করে হাসতে হাসতে বলল, স্যার কয়টা কিডনি আছে বলল, নাকি বেত নিয়ে আসবো। এই শুনে স্যার বলল, কয়টা কিডনি আছে তোমাকে বলতে হবে না, আর পাকামি করে বতও আনতে হবে না। বাহির থেকে কিছু ঘাস নিয়ে আসো, একদম তাজা সবুজ ঘাস।
এই শুনে ফাস্ট বয় বলল, ঘাস দি কি হবে স্যার? এখানে তো কোনো গরু, গাধা, ছাগল, নেই। এবার শিক্ষক বলল, আছে আছে, ক্লাসে একটা গাধা আছে। আমি এই তাজা সবুজ ঘাস ওকে খেতে দেবো।
চারটি কিডনি আছে বলা ছাত্রটি এবার ফাস্ট বয়কে বললো যাও, স্যারের কথামতো তাজা ঘাস নিয়ে আসো। সাথে একটা ফ্রেস কফিও আনতে ভুলবে না কিন্তু।
শিক্ষক এবার রেগে বললো কফি দিয়ে কি হবে? এখানে কফি কে পান করবে? আমি ওকে তাজা সবুজ ঘাস আনতে বলেছি। শিক্ষক কে অবাক করে দিয়ে ছাত্রটি বললো, ‘কফি’ স্যার আমি পান করবো। আর যে গাধা সেই-ই তো ঘাস খাবে।
বিস্মিত শিক্ষক বললেন তুই ছাড়া ক্লাসে গাধাটা আবার কে  বলতো শুনি? আমি তো অন্য কাউকে দেখতে পাচ্ছি না।
তখন ছাত্রটি বললো, আপনি তো স্যার জিজ্ঞাসা করেছেন, আমাদের কয়টা কিডনি আছে। আমার আর আপনার মিলে তো চারটা কিডনি-ই আছে সুতরাং, নিশ্চই  ক্লাসে আমি গাধা না।
স্যার বললো, তুমি বেশি বুঝো। আর বেশি বুঝদার ছাত্রদের আমি পরিক্ষায় শুন্য দেই। তোমার জন্য বরাদ্দ ডাবল শুন্য।
এবার ছাত্রটি মৃদু হেসে বললো- এতে স্যার আপনারই ক্ষতি! সবাই বলবে অমুক স্যারের ছাত্র পরিক্ষায় ডাবল শুন্য পেয়েছে। শুধু শুধু আপনারই বদনাম হবে। আমাকে তো আর তেমন কেউ চেনে না। আপনাকেই সবাই চিনে।
এই কথা শুনে ক্লাসের অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীরা হো হো করে হেসে উঠলো। স্কুল জীবনের শেষে শিক্ষক সেই ছাত্রটির খাতায় একটা বিশেষ নোট লিখলো।
তুমি প্রতিদিন ক্লাসে যে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দাও, বুদ্ধি দিয়ে সবাইকে বাজিমাৎ করো এবং হাসাও। আমার বিশ্বাস এক সময় হয়তো আমাদেরকে কেউ চিনবে না, তবে একদিন তোমাকে পুরো বিশ্ববাসী চিনবে। তুমি পুরো বিশ্ববাসীকে হাসাবে। আমি তোমার জন্য আশির্বাদ রেখে গেলাম।
সেই শিক্ষকের আশির্বাদ স্রষ্টা মন্জুর করেছিলেন।
দুনিয়াবাসী লিজেন্ডদেরও লিজেন্ড, চার্লি চ্যাপলিনকে সত্যি সত্যিই চিনেন। তিনি অভিনয় এবং নিজের অদ্ভুত কর্মকান্ড দিয়ে হাসিয়েছেন পুরো পৃথিবীর মানুষকে।
#নোট:বর্তমান সময়ে এমন অনেক শিক্ষক আছে যারা শিক্ষার্থীদের মোটিভেশন নষ্ট করেন। ক্লাসে একটু দুর্বল
শিক্ষার্থীকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন। যা একজন সত্যিকারের শিক্ষক কখনোই করেন না। একজন সত্যিকারের শিক্ষকই পারেন শিক্ষার্থীর মাঝে
সত্যিকারের আলোটা খুজে নিতে।
স্যালুট জানাই এমন আলোক সন্ধানী শিক্ষকদের…
  • Related Posts

    উলঙ্গ_মন

    আচ্ছা বাবা, তোমরা যেইটা দিয়ে পিশাব করো, ঐটা মুখে নিলে কী হয়? নিজের ৬ বছর বয়সের বাচ্চা মেয়েটার মুখে এই প্রশ্নটা শুনে “আরিফ পুরো থতমত খেয়ে গেল। রিতু এতক্ষন ধরে…

    রহস্যময় ৫০ “লাখ টাকা

    মোবাইলে একটা SMS এলো। তাকিয়ে দেখি.. “সরকারের তরফ থেকে আমার এ্যাকাউন্টে ৫০ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে” আমার মন খুশিতে ভরে গেল। ঘর থেকে বের হলাম আর চিৎকার করে বাড়ির সবাইকে…

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    You Missed

    সেদিন ও সে [পর্ব-১০]

    সেদিন ও সে [পর্ব-১০]

    প্রজাপতি আমরা দুজন [পর্ব-০৩]

    প্রজাপতি আমরা দুজন [পর্ব-০৩]

    মেঘের দেশে প্রেমের বাড়ি [পর্ব-০৩]

    মেঘের দেশে প্রেমের বাড়ি [পর্ব-০৩]

    সেদিন ও সে [পর্ব-৮ & ৯]

    সেদিন ও সে [পর্ব-৮ & ৯]

    নবোঢ়া: আগুনফুলের আত্মনিবেদন [পর্ব-৫২]

    নবোঢ়া: আগুনফুলের আত্মনিবেদন [পর্ব-৫২]

    নবোঢ়া: আগুনফুলের আত্মনিবেদন [পর্ব-৫১]

    নবোঢ়া: আগুনফুলের আত্মনিবেদন [পর্ব-৫১]