রাস্তার ধারে পড়ে থাকা গাছপালার আড়াল হতে ঝিঁঝি পোকার শব্দ ভেসে আসছে।শুনতে অতোটা খারাপ না লাগলেও কিছুটা ভুতুরে ভুতুরে লাগছে। আশেপাশে ল্যাম্পপোস্টের আলো আর বহুদূর থেকে পীপিলিকার মতো আলোর উৎস ব্যতীত আর কোনো আলো দেখা যাচ্ছে না কুয়াশার জন্য।রাস্তার বাম পাশে কিছু দোকানপাট, যেগুলো বন্ধ রয়েছে।আর ডান পাশ ঘেষে একটি খাল।এই আঁধারের সমীপে এসেও স্পষ্ট বোঝা গেলো খালটা অপরিষ্কার।
আশিন হেলমেট খুলতেই পিঠ সমান চুলগুলো ঝড়ঝড়িয়ে গড়িয়ে পড়লো নিজ স্থানে।প্রচন্ড শীতের মাঝে ঠান্ডা হাওয়া গা ছুয়ে দিলো দুজনের।কেঁপে উঠলো উৎস।শীতের জন্য ভারী কোনো পোশাক অপরিহিত থাকায় শীতের দৌরাত্ম্য বুঝতে খুব একটা বেগ পেতে হলো না।আশিন উৎসর দিকে তাকিয়ে দেখলো ছেলেটা ঠান্ডায় ঈষৎ কাঁপছে। ঠান্ডায় কাঁপছে তবুও পরাজয় শিকার করছে না উৎস।আশিন নিজের গায়ের হুডিটা খুলে ছুড়ে মারলো উৎসর দিকে।আশিন বুদ্ধিমতী।হুডির ভেতরে ভারী পোশাক পড়েছে সে।এদিকে উৎস খুব সহজেই ক্যাচ ধরলো।খুশিতে চোখ চিকচিক করলো,‘‘ এতো ভালোবাসা?’ ’
উৎস লাজুক হেসে আবারও বলে,‘‘ আমি কি পাওয়ার যোগ্য?’’
বিরক্ত হয় আশিন,‘‘ বাজে বকা বন্ধ করো।’’
‘‘ আমাকে যে এটা দিলে এটা কি আমার হবে?তোমার সাইজ আর আমার সাইজ আকাশ পাতাল ব্যবধান।’’
আশিনের হুডিটা বড়।উৎস চোখ বন্ধ করেই পড়তে পারবে।এই হুডি পড়ার মূল কারনই তো এই উৎস। আশিন বিরক্তিতে ‘চ’ শব্দটি উচ্চারণ করে।উৎস বুঝলো আশিন বিরক্ত হচ্ছে।তাই চুপ হয়ে গেলো। তবে হুডিটাও পড়লো না বরং বাইকের ওপর রেখেই একটু হেঁটে রাস্তার ধারে পড়ে থাকা কিছু ইটের টুকরো ছুড়ে মারলো সেই বিলে।পানিতে পড়তেই শব্দ হলো।উৎসর এমন কাজে আশিন বেজায় বিরক্ত হলো। দুনিয়ার সব বিরক্তি গলায় ঢেলে বলে,‘‘ পুলিশের হাতে কি ধরা পড়তে চাও?তবে এমনভাবে শব্দ না করে যাও নিজ থেকে আত্মসমর্পণ করো।’’
আশিনের কথা শুনে উৎস হেসে ফেললো,‘‘ আত্মসমর্পণ করতে দেবে?’’
চোখ রাঙিয়ে তাকালো আশিন।উৎস পাত্তা দিলো না।আশিন বাইকের ওপরেই বসা ছিলো।ক্লান্ত সে, এতদূর এভাবে বাইক চালিয়ে নিয়ে এসেছে এতবড় তাগড়া একটা যুবককে।তাই বিশ্রাম নেওয়াটাও জরুরি।উৎস আশিনের কাছে এগিয়ে এলো।বসে থাকা আশিনের দিকে একটু ঝুকে প্রশ্ন করে বসলো,‘‘ আমাকে বাঁচানোর জন্য এতো উতলা হলে যে আশিন।’’
‘‘ যাতে আমি তোমাকে মারতে পারি।’’
‘‘উহু। এটা মোটেও না।সত্যি কথাটা বলতে কি লজ্জা পাচ্ছো?জান!’’
‘‘জান জান ডাকেন কেন?লজ্জা করে না?’’
‘‘লজ্জা নেই বলেই তো ডাকি।’’
আশিন বুঝলো, এই ছেলের সাথে তর্কে পারা যাবে না।তাই চুপ হয়ে গেলো।তবে উৎস তো আর চুপ থাকার মতো মানুষ না।সটান হয়ে দাঁড়িয়ে বলা শুরু করলো,‘‘ তুমি খুবই চালাক।বুঝলাম না তুমি কিভাবে জানলে আমার অবস্থান?আর সবচেয়ে বড় কথা তুমি কিভাবে বুঝলে আমি বিপদে আছি?’’
উৎস আবারও আশিনের দিকে ঝুকে বলে,‘‘আচ্ছা শিনজান, এটাই কি ভালোবাসার টান?’’
বাকি কথাটা না শুনলেও ‘শিনজান’ শব্দটা শুনে আশিনের কপাল সুবিন্যস্তভাবে কুঁচকে গেলো।এটা আবার কেমন ডাক?ছোট্ট করে ‘শিনজান’ শব্দটা আওড়ালেও উৎস সেটা শুনে ফেললো।হেসে প্রত্যুত্তর করলো,‘‘ আশিনের শিন, আর তারপর জান।দুই শব্দের সংমিশ্রণে শিনজান।সুন্দর না? একটা নামের মতোই প্রায়।তোমারও লাভ আমারও লাভ।তোমারও মনে হবে না জান ডাকছি আর আমিও মনভরে জান ডাকতে পারবো।’’
আশিন দুই বিরক্তিতে বাম দিকে ঘুরে তাকালো। এই ছেলে এতো কথা বলে কেন আশিন তা বুঝতে পারে না।এতো বড় ছেলে,ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড ওয়েল্ড কোথায় গম্ভীর থাকবে তা না চঞ্চলতা যেন তার নিগুঢ় উপমা।তবে প্রথম যখন দেখা হয়েছিলো তখন আশিন ভেবেছিলো ছেলেটা গম্ভীর ধাঁচেরই হবে।তবে তার ধারণাকে বুড়ো আঙুল দেখালো উৎস।উৎস আশিনকে মুখ ঘুরিয়ে বসে থাকতে দেখে নিজে নিজেই বললো,‘‘অস্বীকার করতে পারবে না যে আমি চমৎকার অভিধান তৈরিতে পারদর্শী।’’
উৎস বকবক করেই গেলো।আশিন চুপচাপ বসে। হয়তোবা উৎসর কথা শুনছে তো আবার কিছু একটা নিয়ে ভাবছে।আশিনের ফোনে কল আসতেই উৎস কথা বলা থামিয়ে দেয়।আশিনেরও ভাবনায় ব্যাঘাত ঘটে।কল রিসিভ করে লাউড স্পিকার দিতেই ওপাশ থেকে কেউ বলে,‘‘ড. আশিন আপনি কোথায়?’’
আশিন উৎসর দিকে তাকালো।উৎস গোলগোল চোখে তারই দিকে তাকিয়ে।লাউড স্পিকার অন থাকায় উৎস শুনলো কথাটা।আশিন মাটির দিকে তাকালো।অদ্ভুতভাবে জবাব দিলো,‘‘আমি ব্যস্ত আছি।আগামীকাল ফেরার চেষ্টায় থাকবো।’’
‘‘ম্যাম খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ পড়ে গেছে হাসপাতালে।’’
আশিন তার ডান হাতের বুড়ো আঙ্গুলটা নাড়ালো। মাটির দিকে তাকিয়ে থেকেই বলে,‘‘আশা করি আমার চলমান গুরুত্বপূর্ণ কাজের তুলনায় সেটা কিছুই নয়। ’ ’
কল কেটে দিলো আশিন।উৎসর দিকে তাকিয়ে দেখলো ছেলেটার ঠোঁটে হাসি লেগে আছে।চোখ দিয়ে ইশারা করল বাইকে ওঠার।উৎস শুনলো।ঠোঁট প্রসারিতও হলো।বাইক থেকে আশিনের সেই হুডিটা গায়ে জড়ালো।হুডিটা আরও বড় হয়েছে উৎসর। উৎস দাঁড়িয়ে থেকেই বলে,‘‘তুমি নামো আমি রাইড করবো এখন।’’
আশিন বিনাবাক্য ব্যয়ে নামলো।উৎস উঠলো তার পেছনে আশিনও উঠলো।উৎসর মনে পড়লো সে রাস্তা চেনে না।উৎস কেশে আশিনকে জিজ্ঞাসা করে,‘‘আমার এই এলাকা কিংবা রাস্তা কোনোটাই পরিচিত নয়।তুমি যদি…’ ’
‘‘যেতে থাকো আমি ডিরেকশন দিচ্ছি।’’
উৎস বাইক স্টার্ট দিলো তবে দেখা গেলো আশিন নিজের মতো করে বসেছে উৎসকে ধরে নি পেছন থেকে।উৎসর ভালো লাগলো না,‘‘আমাকে ধরে বসো ড.।নয়তো পড়ে যাবে।সামনে আঁকা বাকা রাস্তা মনে হচ্ছে।’’
আশিন ধরলো না।উৎস ইচ্ছে করেই সামনে গিয়ে ব্রেক কষলো।এতে অবশ্য আশিন নড়লো না অনড়ই রইলো।হতাশ উৎস আবারও বাইক স্টার্ট দিলো। আশিন রাস্তার পাশে গাছপালাগুলোর দিকে তাকালো তারপর আস্তে আস্তে ডান হাত বাড়িয়ে উৎসর হুডি একাংশ ধরলো।আর বাম হাত কোমড়ের কাছটাই রাখলো।তবে উৎসর মন ভরলো না বরং বাম হাত আরও টেনে নিলো পেটের কাছে।এতে উৎসর পিঠে ঝুকে এলো আশিন।আশিন উঠতে চাইলো তবে দেখা গেলো এখন একটু শীত কম লাগছে।অনিচ্ছাসত্ত্বেও উৎসর বাম কাঁধে আশিন মাথা রাখে।উৎস চমৎকার হাসলো।বাইকের স্পিড যত বাড়ছে ততই বেশি শীত লাগছে।আশিনের ডিরেকশন দিচ্ছে কোনদিকে যেতে হবে।উৎসও চুপচাপ বাইক চালাচ্ছে।রাস্তাটার আশেপাশে দোকানপাট রয়েছে এছাড়া মনে হচ্ছে এটা কোনো গ্রামাঞ্চল হবে।আশিন কিভাবে এসবের রাস্তা চেনে? উৎস আবারও ভাবলো আশিন মোটেও স্বাভাবিক নয়।
আশিনের কঠিন চিত্তে আজ হঠাৎ মনে হলো শীতের রাতের এই কুয়াশাগুলো পিয়ানো বাজাচ্ছে। ছোটবেলার কথা মনে পড়ছে খুব।আশিন চোখ বুজে থাকলো কিছুক্ষণ।নিজের জীবনের হিসাব মিলাতে লাগলো।বাবার কথা মনে পড়ছে।আগের তুলনায় কন্ডিশন ভালো।তবে কখন কি হয় সেটা সৃষ্টিকর্তা ভালো জানেন।উৎস চুপ ছিলো এতক্ষণ যাবৎ। তবে নিরবতা কাটিয়ে আশিনকে ডাকলো,‘‘শিনজান!’’
আশিন উত্তর করলো না।চুপই রইলো।উৎসই জিজ্ঞাসা করলো আবার,‘‘ তুমি কি শুধু ডাক্তারই? নাকি আরও কোনো পেশায় জড়িত?’’
‘‘ কেন তোমার কি মনে হয়?’’
‘‘ আমার সবসময়ই তোমাকে সন্দেহ হয়।সেদিন গ্রামেও কিভাবে যেন হাসছিলো রাতে অন্ধকারে।তুমি মোটেও স্বাভাবিক কেউ নয়।’’
‘‘ তুমি কি বলতে চাইছো? আমি অস্বাভাবিক?’’
‘‘ আচ্ছা তুমি এই জায়গা চেনো কিভাবে?’’
আশিন ছোট করে বলে,‘‘ আসা যাওয়া হতো তাই।’’
তবে সেটা উৎস শুনলো না।উৎস এই প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে বলে,‘‘ এটা বলো তোমার বয়স কত?’’
‘‘উনত্রিশ।’’
উৎস চমকালো,‘‘ কি?সত্যি বলছো?তুমি আমার থেকে এক বছরের ছোট শুধু?’’
‘‘ তোমার কি মনে হয় আমি মিথ্যা বলার মানুষ?’’
‘‘ সেটা নয় তবে তোমার চেহারায় ওইযে ওই ভাবটা নেই।ওইযে বলে না ‘নারী কুড়িতেই বুড়ি’।’’
‘‘ তুমি কি চাও বুড়ি হয়ে যায়?’’
উৎস হেসে উঠলো,‘‘ আমি চাই তুমি আমার হয়ে যাও।’’
আশিন চুপ রইলো।এই কথার প্রেক্ষিতে আপাতত কোনো ইতিবাচক হোক বা নেতিবাচক কথাও আসছে না।উৎসও চুপ হলো।সরু রাস্তা ছেড়ে এবার বিশাল রাস্তায় এসে পৌঁছালো তারা।অনেক গাড়ি চলাচল করছে।উৎস আশিনকে জিজ্ঞাসা করলো,‘‘এই শিনজান!এ আমরা কোথায় এসে পৌঁছালাম?’’
আশিন উত্তর না দিয়ে নেমে একটু দূরে গেলো।উৎস পিছু নিলো না।আশিন কাউকে কল করে।কল রিসিভ হতেই সোজাসাপ্টা বলে,‘‘উৎসর এখন কুমিল্লা যাওয়া কি সম্ভব?’’
ওপাশ হতে উত্তর আসলো,‘‘আপাতত সব কন্ট্রোলে আছে যেতে পারবে ও।’’
বাইকটা সাইডে দাঁড় করালো উৎস।বাইক থেকে নেমে আশিনের দিকে তাকিয়ে রইলো।মেয়েটা কার সাথে কথা বলছে?আশিন কথা বলা শেষে এগিয়ে এলো।আর বললো,‘‘এখন তুমি চলে যাও নিজ গন্তব্যে।গাজীপুর আছি এখনও, আশা করি কুমিল্লা যেতে পারবে গুগল ম্যাপ দেখে।’’
উৎসর মন কেমন করলো।সে কুমিল্লা গন্তব্য আশিনের সাথে পাড়ি জমাতে চায়।একটা সুন্দর গন্তব্য সে নিজেই আশিনকে উপহার দেবে।উৎস আবদার করে বসলো,‘‘ শিনজান,তুমিও চলো আমার সাথে।’’
আশিন শীতল দৃষ্টিতে তাকালো উৎসর দিকে। চারপাশে এখন আলো অনেক।লোক সমাগম না থাকলেও গাড়ির সমাগম রয়েছে অনেক।আশিনের চোখগুলো অন্যদিনের তুলনায় আজ একটু বেশিই সুন্দর লাগলো উৎসর। আশিনের চোখে মণিটা ঘোলাটে মনে হলো উৎসর। আশিন প্রত্যুত্তর করলো,‘‘আমার কাজ আছে।চলে যাও তুমি।দ্বিতীয়বারের মতো তোমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছি।বাকি গন্তব্য তোমার।’’
উৎস মাটির দিকে তাকিয়ে হাসলো।মন খারাপ হলো কিছুটা।হাত দিয়ে কপাল চুলকে বলে,‘‘বাকি গন্তব্যেও তুমি সামিল হয়ে যাও শিনজান।’’
আশিন স্থির দৃষ্টে তাকিয়ে রইলো।বাইকের ওপর রাখা হেলমেটটা পড়ে উঠে বসলো।উৎসকেও চোখ দিয়ে ইশারা করলো উঠতে।একবার হাতঘড়িতে সময় দেখলো তিনটা বেজে গেছে।একটুপরই ভোরের আলো ফুটবে।এই ছেলের বিপদ তখনই বেশি হবে। আশিন রেগে গেলো।নিজের ভালো পাগলও বোঝে। উৎস উঠে বসলো আশিনের পেছনে।আশিন বাইক স্টার্ট দিলো।উৎস আশিনের কোমড় জড়িয়ে ধরলো আর আশিনের মতোই উৎস আশিনের কাঁধে মাথা রাখলো।ভিন্ন একটা অনুভুতি মনে হলো আশিনের। বাইক চললো নিজ গন্তব্যে।যাত্রাবাড়ি পেরোতেই ভোরের আলো ফুটলো।কুয়াশা ভেদ করে সূর্য উঁকি দিলো মিষ্টি হেসে।কুয়াশা গুলো এখন ঝড়ে পড়বে শিশিরবিন্দু হয়ে।
আশিন বুঝলো উৎসর ঘুম পাচ্ছে।বার বার হাই তুলছে।বাইকের স্পিড বাড়িয়ে দিলো।নতুন দিনের এই সূচনাটা আশিনের অন্যরকম মনে হলো।এমন সূচনা তার জীবনে প্রথম।আশিন আনমনেই বলে উঠলো,‘‘তুমি আগন্তুক হলেও পারতে।আমি আজীবন মনে রাখতাম।তবে তুমি কি নিবিড়ভাবে আমার জীবনের সাথেই জড়িয়ে যাচ্ছো।আগলে রাখার মানুষ আমি নই।তবুও দেখি কতদূর যায়।’’
চলবে….


![প্রজাপতি আমরা দুজন [পর্ব-০৭]](https://amarlekha.com/wp-content/uploads/2025/07/photo_6212761625384044921_y.jpg)
![মেঘের দেশে প্রেমের বাড়ি [পর্ব-০৮]](https://amarlekha.com/wp-content/uploads/2025/10/3cf51236-2d29-45c2-a963-4d58a217fde2.jpg)
![নবোঢ়া: আগুনফুলের আত্মনিবেদন [পর্ব ৫৮]](https://amarlekha.com/wp-content/uploads/2025/05/IMG_20250529_231033.jpg)
![সেদিন ও তুমি [পর্ব-০২]](https://amarlekha.com/wp-content/uploads/2025/09/a-simple-light-colored-t-shirt-and-je.jpg)
![মেঘের দেশে প্রেমের বাড়ি [পর্ব-০৭]](https://amarlekha.com/wp-content/uploads/2025/07/srthgerf.jpeg)